‘হিন্দু রাষ্ট্র’ চান শুভেন্দু, পাল্টা সরব বাম-তৃণমূল
নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ ও কলকাতা: রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে এত দিন বার বার তোষণের অভিযোগ তুলে এবং ধর্মনিরপেক্ষ (‘সেকুলার’) রাজনীতিকে নিশানা করে হিন্দু ভোট এককাট্টা করার কথা বলছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার এক ধাপ এগিয়ে ভারতের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি তুলে দিয়ে দেশকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণার পক্ষে সওয়াল করলেন শুভেন্দু! এই প্রেক্ষিতে পাল্টা বিজেপি, আরএসএসের রাজনৈতিক দর্শনকেই তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামেরা।
পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুরে’র সাফল্যের কারণে দেশের সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ জানিয়ে রবিবার বনগাঁয় ‘তিরঙ্গা যাত্রা’র আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেখানে যোগ দিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, “আমার ব্যক্তিগত মত, সেকুলার শব্দটা তুলে দেওয়া উচিত। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা উচিত।” ঘটনাচক্রে, এর আগে কর্নাটকের সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে-সহ বিজেপির বিভিন্ন নেতার মুখে হিন্দু রাষ্ট্রের কথা শোনা গিয়েছিল।
শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরে সরব হয়েছে সিপিএম এবং তৃণমূল। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “আরএসএস বহু দিন ধরেই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার চেষ্টা করছে। দেশবাসী তা মানেনি। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের চরিত্র।” এর সঙ্গেই শুভেন্দুর রাজনৈতিক পূর্বাশ্রমকে নিশানা করে সুজন বলেছেন, “এখন যিনি এই কথা বলছেন, তিনিই কংগ্রেস বা তৃণমূলে থাকার সময়ে উল্টো কথা বলতেন। এখন যা বলছেন, কাল দল বদলালে বয়ানও বদলাবে। এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাজার গরম করা।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষেরও বক্তব্য, “দেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। তার মূল সুরটা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। ‘রোটি, কাপড়া, মকান’ নিশ্চিত করতে হবে। তা না করে উল্টোপাল্টা বলেন বলেই বাংলার মানুষ ওঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।”
শাসক দল ‘জঙ্গিদের মদতদাতা’ বলে অভিযোগ করে ফের সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এই সূত্রেই তাঁর সংযোজন, “সনাতনীদের বলব, মুসলিম লিগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলুন।” তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণালের পাল্টা বক্তব্য, “মালেগাঁও বিস্ফোরণে বিজেপির সাধ্বী প্রজ্ঞা জড়িত। তা হলে জঙ্গিদের সঙ্গে বিজেপিরই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত।”