লিখিত কিছু জানাননি রাহুল, দাবি কমিশনের
মুম্বই, ৮ জুন: মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোটের বিপুল জয়ের পর থেকেই বিরোধীরা বিশেষ করে কংগ্রেস নেতৃত্ব ভোটার সংখ্যায় গরমিল, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। শনিবারই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, গণতন্ত্রকে লুঠ করার ‘নীলনকশা’ তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্র নির্বাচনে। এ বছরের শেষে বিহার বিধানসভা নির্বাচনেও সেই নকশা মেনেই বিরোধীদের হারানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাঁর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও বিরোধীদের বক্তব্য, যে ভাবে লোকসভা ভোটের কয়েক মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্রে প্রায় ৪০ লক্ষ ভোটার বেড়েছে, তা সন্দেহজনক। এবং এ ব্যাপারে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকেই আঙুল তুলেছেন।
রাহুলের অভিযোগের জবাবে মুখ খুলে রবিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডনবীস বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধী ক্রমাগত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অসম্মান করে চলেছেন। মানুষ রাহুল গান্ধীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং পাল্টা জবাবে রাহুল গান্ধী মানুষের রায়কে প্রত্যাখ্যান করছেন। এর ফলে কংগ্রেস আরও তলিয়ে যাবে।’’ এমনকি কংগ্রেস দেশের সাংবিধানিক কাঠামোগুলোকে অস্বীকার করছে বলেও সরব হয়েছেন তিনি।
শনিবার তাঁর নিবন্ধে রাহুল দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের ভোটে পাঁচ ধাপে কারচুপি করা হয়েছে। প্রথমত, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্যানেল স্থির করার প্রশ্নে কেন প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে স্থান দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর মতে, এর ফলে তিন সদস্যের ওই কমিটির (প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী) মাধ্যমে সরকার প্রতিবারই নিজের পছন্দমতো লোককে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে সক্ষম হবে। দ্বিতীয়ত, ভুয়ো ভোটার বাড়িয়ে গরমিল।
রাহুলের দাবি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৯.২৯ কোটি। কিন্তু এর ছয় মাসের মধ্যে হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে সেই ভোটার সংখ্যা বেড়ে হয় ৯.৭০ কোটি। ছয় মাসে ভোটার বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুলের অভিযোগ, এদের অধিকাংশই ভুয়ো ভোটার। তৃতীয়ত, মহারাষ্ট্রে ভোটের দিন বিকেল পাঁচটায় ভোটদানের হার ও চূড়ান্ত ভোটদানের হারের মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ পার্থক্য দেখা দিয়েছে, হিসেব মতো যা প্রায় ৭৬ লক্ষ ভোট। চতুর্থত, যে সব কেন্দ্রে বিজেপি দুর্বল, সেখানে ভোটার বাড়ানো হয়েছে। এবং পঞ্চমত, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। রাহুলের অভিযোগ, আইন করে ভোটের সময়কার ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
রাহুল গান্ধীর এই অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছে নির্বাচন কমিশনও। কমিশন সূত্রের দাবি, রাহুল গান্ধী মুখে একাধিক অভিযোগ করলেও তা নিয়ে লিখিত কোনও চিঠি নির্বাচন কমিশনকে দেননি এমনকি অভিযোেগ করার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চাননি। নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক কোনও সংস্থা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই পদক্ষেপ করতে পারে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি। সংবাদ সংস্থা