আয়োজক নই, বিপর্যয় নিয়ে যুক্তি সিদ্দার
নিজস্ব প্রতিবেদন
৮ জুন: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)-র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজক তিনি ছিলেন না। তিনি নিমন্ত্রিত মাত্র। সংবর্ধনা ঘিরে জনসমুদ্রে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর পরে এ বার এই যুক্তি দিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া!
গত ৪ জুন বেঙ্গালুরুর বিধান সৌধে আইপিএল-জয়ী ক্রিকেটারদের সঙ্গে এক মঞ্চে রাজ্যপাল থওয়ারচন্দ গহলৌতের সঙ্গে ছিলেন সিদ্দা এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। আজ সিদ্দা বলেছেন, ‘‘কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা (কেএসসিএ)-র সচিব ও কোষাধ্যক্ষ এসে আমাকে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজক কেএসসিএ, আমরা নই। ওঁরা বলেছিলেন, রাজ্যপাল আসবেন। আমি শুধু এটুকুই জানি যে, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলেই সেখানে গিয়েছিলাম। আমাকে তো স্টেডিয়ামে ডাকা হয়নি।’’
বিপর্যয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বেঙ্গালুরু পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (আইনসভার নিরাপত্তা বিষয়ক) এম এন কারিবাসবনা গৌড়ার লেখা একটি চিঠি সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে। চিঠিটি তিনি পাঠিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের সচিব জি সত্যবতী এবং আরও কয়েক জন পদাধিকারীকে। চিঠিতে ডিসিপি গৌড়া জানিয়েছিলেন, আইনসভার নিরাপত্তা বিভাগে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। বিধান সৌধের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যশালী ভবনে নজরদারি পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। ওই পুলিশকর্তা লেখেন, ‘সারা দেশে আরসিবি-র ভক্তেরা ছড়িয়ে রয়েছেন। নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যায় যেখানে ঘাটতি রয়েছে, সেখানে বিধান সৌধে লক্ষ লক্ষ ক্রিকেট ভক্ত জড়ো হলে ভিড় সামলানো বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’
বিধান সৌধের জনসমুদ্র ক্রিকেটারদের পিছু-পিছু চিন্নাস্বামীতে পৌঁছয়। সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে। ডিসিপি গৌড়া তাঁর চিঠিতে সুপারিশ করেছিলেন, ভিড় সামলাতে ওই দিনের সমস্ত অনলাইন ও অফলাইন পাস বাতিল হোক। সচিবালয়ের কর্মীরা কেউ যেন সপরিবার দফতরে না-আসেন। দুপুরের পরে ছুটি ঘোষণা করা হোক। জরুরি ভিত্তিতে শহরের বাইরে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ে জোর দিয়েও তিনি বলেছিলেন সীমিত সময়ে এত কিছু করা মুশকিল। এ ছাড়া, সংবর্ধনার মঞ্চটি পূর্ত দফতরকে দিয়ে পরীক্ষা করানো, অবাঞ্ছিত ড্রোন আটকানোর ব্যবস্থা করা, অন্তর্ঘাত রুখতে অনুষ্ঠানের অন্তত দু’ঘণ্টা আগে যাবতীয় বন্দোবস্ত খতিয়ে দেখার সুপারিশও করেছিলেন ডিসিপি। লিখেছিলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই পুলিশ কাজ করবে। কিন্তু সুরক্ষার স্বার্থে কড়া আচরণবিধি জরুরি।’
এ সব সুপারিশ কি শুনেছিল সরকার? স্পষ্ট উত্তর নেই।