যত কাণ্ড চুক্তিতে
জটিলতা এড়াতে আগামী দিনে কি মুক্তি-চুক্তির পথে হাঁটবে টালিগঞ্জ?
একই সময়ে একই অভিনেতার একাধিক ছবি মুক্তি পাচ্ছে, এমন উদাহরণ কম নেই। এতে সেই অভিনেতাও যেমন সমস্যায় পড়েন, দর্শকও বিভ্রান্ত হন। বেশি সমস্যা দেখা দেয় প্রচারের সময়ে। দু’টি আলাদা বিষয়ের ছবির প্রচার, দুই প্রযোজনা সংস্থার আলাদা দাবি, ব্যস্ত শিডিউল... অনেক কিছু সামলাতে হয়। জটিলতা এড়ানোর জন্য অনেকে এখন ছবি মুক্তির সময় নিয়ে চুক্তি করছেন। বিশেষত পুজো রিলিজ়ের ক্ষেত্রে। সেই চুক্তিতে বলা থাকছে, একজন অভিনেতার দুটো ছবি এক সময়ে মুক্তি পাবে না। এতে জটিলতা কাটার কথা, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা না-ও হতে পারে। যেমন আবীর চট্টোপাধ্যায় ‘রক্তবীজ টু’ করার আগে প্রযোজকের সঙ্গে যে চুক্তি করেছেন তাতে শর্ত ছিল, এ বারের পুজোয় অভিনেতার আর কোনও ছবি মুক্তি পাবে না। এ দিকে অনীক দত্ত পরিচালিত ‘যত কাণ্ড কলকাতায়’ ছবিটি এই পুজোয় রিলিজ়ের পরিকল্পনা করেছেন প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। ফলে অভিনেতার দু’টি ছবির সংঘাত লাগছে।
পুজোয় ‘রক্তবীজ টু’ ছাড়া তাঁর আর কোনও ছবি মুক্তি পাবে না, এই শর্তের কথা স্বীকার করে নিলেন আবীর। জানালেন, গত বছর ‘বহুরূপী’র সময়েও একই শর্ত ছিল, তবে তা মৌখিক। এ বার সবটাই কাগজেকলমে। এর ফলে ‘যত কাণ্ড কলকাতায়’ পুজোয় মুক্তি পেলে তার প্রচার করতে পারবেন না আবীর।
এ বার পুজোয় ‘রঘু ডাকাত’, ‘দেবী চৌধুরানী’ এবং ‘রক্তবীজ টু’ আসছে। অনীক দত্তর ছবিটির পুজোয় মুক্তি নিয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর, ছবিটি পুজোতেই নিয়ে আসতে চান প্রযোজক। এ প্রসঙ্গে ফিরদৌসুল হাসান বলেন, “ছবি রিলিজ়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হোক, তার পর এ নিয়ে কথা বলব।” গত বছরও পুজোর সময়ে ‘যত কাণ্ড...’ রিলিজ়ের কথা নাকি ভেবেছিলেন তিনি, কিন্তু সে সময়ে আবীরের ‘বহুরূপী’র কারণে পিছিয়ে আসেন। প্রসঙ্গত, ‘রক্তবীজ টু’-এর চুক্তির আগেই ২০২৩-এ অনীকের ছবির শুটিং হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ‘যত কাণ্ড...’ মুক্তিতে আইনত কোনও বাধা নেই।
এর আগে ২০১৫-র পুজোয় আবীরের ‘রাজকাহিনী’ এবং ‘কাটমুণ্ডু’ ছবি দুটো মুক্তি পায়। ২০১৪-য় ফেলুদা ও ব্যোমকেশ দুই রূপেই পর্দায় এসেছিলেন অভিনেতা। ‘ব্যোমকেশ ফিরে এল’ এবং ‘বাদশাহী আংটি’ একই দিনে মুক্তি পায়। তাই অভিনেতার পক্ষে এমন চুক্তি করা স্বাভাবিক। আবীরের কথায়, “কখনওই চাইব না আমার দুটো ছবি একসঙ্গে রিলিজ় করুক। সব সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। কাজের জায়গায় ন্যূনতম বোঝাপড়া থাকাটা কাম্য।”
সিনে-ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের মতে, দুটো ছবির জন্য আলাদা আলাদা প্রচার করাই আসল সমস্যা। গত বছর পুজোয় এক অভিনেতার সিনেমা ও সিরিজ় দুই-ই মুক্তি পেয়েছিল। দুই নির্মাতাই তাঁদের কাজ বেশি করে প্রচারের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তাঁকে। ফলে খাতায়কলমে চুক্তি থাক বা না থাক, পারস্পরিক বোঝাপড়াটা সবচেয়ে বেশি জরুরি।