প্র: আপনাকে একটু ক্লান্ত দেখাচ্ছে...
উ: ‘সওয়ার’ বলে একটা নাটক করছি। তার রিহার্সাল চলছিল। সেটা সেরেই ফ্রেশ হয়ে চলে এলাম।
প্র: ‘ভূতপূর্ব’ ছবির ‘মণিহারা’ গল্পে ফণিভূষণের চরিত্রে আপনি। এই চরিত্র দর্শক-পাঠকের খুব চেনা। তুলনা চলে আসবে মনে হয়নি?
উ: তুলনা হবে ভেবে কিন্তু প্রস্তুতি নিইনি। কলেজে পড়াকালীন ‘তিন কন্যা’ দেখেছি। ফলে স্মৃতিতে যে খুব স্পষ্ট রয়েছে, তা নয়। প্রস্তাব পাওয়ার পরে ভেবেছিলাম, ছবিটা দেখব। তার পর মনে হল, না দেখেই করি। কারণ দেখলেই বরং সেই রেফারেন্স চলে আসবে। তাই স্ক্রিপ্ট অনুসরণ করেছি।
প্র: নতুন পরিচালকের ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: কাকলিদি (ঘোষ), অভিনবদা (মুখোপাধ্যায়) নিজের কাজের পরিধি জানেন। ওঁরা পরিচালনাটা সুন্দর সামলেছেন। এর আগেও নতুন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি, তবে অনেকেই কাজ করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন। এটা জানি কারণ আমার অ্যাসিস্ট করার অভিজ্ঞতা আছে। ‘নির্বাক’, ‘রাজকাহিনী’, ‘জ়ুলফিকর’... অনেক ছবিতে অ্যাসিস্ট করেছি। শেষ কাজ করেছি ‘মন্দার’-এ।
প্র: পরিচালনায় আসার ইচ্ছে আছে?
উ: ইচ্ছে তো আছে। তবে আমি নাট্যনির্দেশনা দেওয়ার মতো এখনও তৈরি হইনি। মঞ্চে পরিচালকের উপরে খুব নির্ভরশীল। কিন্তু ছবি পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে। সেই কাজের প্রশিক্ষণও নিয়েছি। তাই ছবি পরিচালনার ইচ্ছে আছে।
প্র: ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র পরে কোনও ছবিতে প্রধান চরিত্রে আপনাকে পাওয়া গেল না কেন?
উ: এটা তো পরিচালক-প্রযোজকরা বলতে পারবেন। তবুও বেশ কিছু কাজ তো করলাম। প্রধান চরিত্র হলে অনেকটা সময় পাওয়া যায়, তাই চরিত্রে ঢুকতে সুবিধে হয়। তবে চরিত্র ছোট না বড়, সেটা ভেবে ছবি বাছি না। ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’-এ যেমন মণিলালের চরিত্রে ছিলাম, ‘রক্তবীজ’-এর চরিত্রটাও অন্য রকম ছিল।
প্র: ভাল চরিত্র বা বড় প্রযোজনা সংস্থায় কাজের সুযোগ পেতে কি ইন্ডাস্ট্রিতে যোগাযোগ দরকার?
উ: সেটা তো দরকার। অডিশন দিয়ে সব সময়ে কাজ হয় না। একটু যোগাযোগ লাগে। তবে ‘বল্লভপুর...’ যখন পাই, সেটা অডিশন দিয়েই পেয়েছিলাম। কারণ অনির্বাণদার (ভট্টাচার্য) কাজ করার ধরনটা আলাদা। আর যা কাজ পেয়েছি, ‘বল্লভপুর...’-এর পরেই। তখনই পরিচালক, দর্শকের চোখে পড়ি। তাই প্রথম ধাক্কাটাও দরকার, আর তার পরে যোগাযোগও।
প্র: নিজে কাজ চেয়েছেন কখনও?
উ: হ্যাঁ, চেনাজানা, বন্ধুদের মধ্যেই বলি। কিন্তু বন্ধুরা যদি মনে করে তার গল্পে আমাকে দরকার, তবেই বলবে। বন্ধু বলে আমায় কাস্ট করবে, এমন মানুষ আমার বন্ধুতালিকায় নেই।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে কি কাজ কমছে?
উ: হ্যাঁ, ভাল মতো কমছে। সেটা দিনে-দিনে বুঝতে পারছি।
প্র: নিরাপত্তার অভাব মনে হয় না? অন্য কিছু করার কথা ভেবেছেন?
উ: আসলে এই নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে এত দিন চলেছি যে, সেটাই জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছে। তিন মাস কাজ থাকবে, তিন মাস থাকবে না, এ ভাবেই চলে এসেছি। কিন্তু এ বছরটা খুব প্রভাব পড়ছে। আগের বছর অবধিও এতটা কাজের অভাব ছিল না। এখন মনে হচ্ছে একটা ‘প্ল্যান বি’ দরকার।
প্র: অভিনেতা হিসেবে মঞ্চ না পর্দা, কোনটার প্রতি দুর্বলতা বেশি?
উ: দুর্বলতা বলব না। তবে মঞ্চে নিয়মানুবর্তিতা আছে। সেখানে এখনও কাদা ঢোকেনি। এখন যেমন শুটিংয়ের ফাঁকে অনেকেই ফোন, রিলস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। যাঁরা নাটক করেন, তাঁদের মধ্যে সেটা দেখা যায় না। তাঁদের কাজ করার ধরনটা এক, ফলে সুবিধে হয়। আসলে যে কোনও জায়গায় বেসিক শৃঙ্খলাটুকু মানা হলে সিনেমা, সিরিজ় আর নাটকের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকে না।
প্র: দাম্পত্য শুরু করেছেন সম্প্রতি...
উ: সবে এক বছর হল। তবে ওর সঙ্গে আলাপ আমার স্কুলে, নবনালন্দায় নৃত্যনাট্য করতে গিয়ে। স্কুলে ‘চণ্ডালিকা’, ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘ভানুসিংহের পদাবলী’... অনেক নাচের অনুষ্ঠান করেছি। স্কুল ছাড়ার পরে ‘চিত্রাঙ্গদা’ করার জন্য ডাক আসে। তখন ও ফাইনাল ইয়ার, সেই বন্ধুত্বের শুরু, তার পর দশ বছর কেটে গিয়েছে। বন্ধুত্বই দাম্পত্যটা সহজ করে দিয়েছে।
নবনীতা দত্ত
লোকেশন: করিডোর