জেলে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ আওয়ামী লীগ কর্মীদের, অভিযোগ ওড়াল প্রশাসন
অনির্বাণ দাশগুপ্ত
বাংলাদেশে গত অগস্টে পালাবদলের পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন কারাগারে তাদের ২৫ জন নেতা-কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার দলের দাবি, এ পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তৃতায় এই প্রসঙ্গ উল্লেখও করেছেন। যদিও প্রশাসন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে গত ১০ মাসে হাসিনা সরকারের আমলের শতাধিক মন্ত্রী-সাংসদ কারাবন্দি। অভিযোগ, এদের অধিকাংশকেই বিনা বিচারে বন্দি রাখা হয়েছে। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে আওয়ামী লীগ লিখেছে, ‘বাংলাদেশে এখন আদালত মানেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য মৃত্যুপরোয়ানা! কারাগার মানেই মৃত্যুকূপ! আর এই সব কিছুর পেছনে যিনি সুপরিকল্পিত ভাবে কলকাঠি নাড়ছেন, তিনি হলেন কথিত শান্তিকামী ড. মুহাম্মদ ইউনূস— যিনি আজ এক জন রাজনৈতিক খুনি, রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞের পরিচালক’। বগুড়া, গোপালগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, ঢাকা, খুলনা-সহ ১৯টি জেলায় বন্দি অবস্থায় কারাগারে আওয়ামী লীগে ২৫ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শেখ হাসিনার অভিযোগ, ‘‘জেলগুলিতে এখন আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা শুরু হয়েছে। খুনও করা হচ্ছে কায়দা করে। রিমান্ড রুমে নিয়ে গিয়ে আমাদের কর্মীদের প্রচণ্ড মারধর করা হচ্ছে। যখন দেখছে তাঁরা মৃতপ্রায় বা মরে গিয়েছে, তখন কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বলা হচ্ছে, হার্ট ফেল করে মারা গিয়েছে।’’
হাসিনার দলের দাবি, বগুড়া জেলায় বন্দি অবস্থায় মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ, গাইবান্ধা এবং কেরানীগঞ্জ জেলায় কারাগারে দু’জন করে আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যুর খবর মিলেছে।
প্রশাসন অবশ্য এই অভিযোগ নসাৎ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ওই সব মৃত্যু স্বাভাবিক। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরে বগুড়া জেলা কারাগারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তিনি বলেছেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁরা বয়স্ক এবং কারাগারে আসার আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁদের স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে। কারাগারে বিন্দুমাত্র অবহেলা হয়নি। কেউ ডায়াবিটিস,কেউ হৃদরোগ কিংবা কেউ প্রেশারের রোগী ছিলেন আগে থেকেই। রাজনৈতিক নেতা
হওয়ায় হয়তো মানসিক চাপ বা হতাশায় অসুস্থতা বেড়ে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।’’
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, আওয়ামী লীগের কোনও নেতা-কর্মী কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁদের বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হচ্ছে। বগুড়া জেলা কারাগারের সুপারকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, কারাগারের ভিতরে কেউ অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।