ডিআইজির বাড়ি থেকে উদ্ধার পাঁচ কোটি, নজরে লাল ডায়েরি
চণ্ডীগড়, ১৭ অক্টোবর: প্রথমে ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো। তার পরে সেই মামলা থেকে নিস্তার দেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পঞ্জাবের রোপার রেঞ্জের ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তদন্তে নেমেছিল সিবিআই-ও। সেই সূত্রে শুক্রবার হরচরণের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ দল। যেখান থেকে উদ্ধার হয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। মেলে দু’টি বিলাসবহুল বিদেশি গাড়ি এবং অন্তত ২২টি দামি ঘড়ির খোঁজ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে একটি লাল ডায়েরিও। তদন্তকারীদের দাবি, সেই ডায়েরিতে কোন ব্যবসায়ীর থেকে কত টাকা আদায় করা হয়েছে কিংবা হবে— তার হিসাব রাখতেন হরচরণ। তাঁকে গ্রেফতার করে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি মোহালির এক ব্যবসায়ী আকাশ বাত্রা হরচরণের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ওই ব্যবসায়ীর দাবি ছিল, তাঁকে মিথ্যা ফৌজদারি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন হরচরণ। এর পরে কৃশানু নামে এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে সেই মামলা থেকে তাঁকে রেহাই দেওয়ার উপায়ের খোঁজও পাঠিয়েছিলেন ডিআইজি হরচরণ। কিন্তু শর্ত ছিল— কৃশানুর হাতে তুলে দিতে হবে নগদ আট লক্ষ টাকা। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন ওই ব্যবসায়ী।
অভিযোগ পেয়ে ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লারের বিরুদ্ধে শুরু হয় সিবিআই তদন্ত। ব্যবসায়ী আকাশ বাত্রার সঙ্গে বোঝাপড়া করে সিবিআই আধিকারিকেরা টাকা দেওয়ার টোপ দিয়ে হরচরণের সহযোগী কৃশানুকে ডেকে পাঠান। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এর পরে কৃশানুর মোবাইল থেকেই হরচরণকে ওয়টস্যাপ কল করা হয়। ফোনের ও-পার থেকে কৃশানুকে টাকা সংগ্রহের নির্দেশ দেন তিনি। সেই কল এবং কৃশানুর বয়ানের সূত্রে মোহালিতে হরচরণের অফিসে হানা দেয় সিবিআই। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরে শুক্রবার তল্লাশি চালানো হয় হরচরণের বাড়িতেও। অন্য দিকে, কৃশানুর কাছ থেকেও মেলে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা।
এ দিন হরচরণের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। মেলে দেড় কেজি সোনা, দু’টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ২২টি দামি ঘড়িও। মিলেছে হরচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত ১৫টিরও বেশি সম্পত্তির নথি, বেশ কয়েকটি লকারের চাবি এবং ৪০ লিটার বিদেশি মদ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ডাবল ব্যারেল বন্দুক, একটি পিস্তল, একটি রিভলবার এবং এয়ারগানও।
সংবাদ সংস্থা