দিল্লির চিন্তা বাড়িয়ে করাচি বন্দর ঢাকাকে ব্যবহারের সুযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর: সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাড়িয়ে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে সখ্য বাড়ছে। কখনও তা কৌশলগত, কখনও বাণিজ্যিক। এ বারে বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ঢাকাকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামাবাদ। যুক্তি, এর ফলে আঞ্চলিক বাণিজ্য জোরদার হবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই নতুন প্রস্তাবটি চিনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প চিন-পাকিস্তান অর্থর্নৈতিক করিডরের সঙ্গে একাত্ম করে দেখানো হচ্ছে। এই প্রকল্পটি নিয়ে দশ বছরেরও বেশি সময় যাবৎ নয়াদিল্লি ধারাবাহিকভাবে আপত্তি জানিয়ে আসছে। মোদী সরকারের বক্তব্য, এই অর্থনৈতিক করিডর যাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। যাকে ভারতের ভূখণ্ড বলেই দাবি করে ভারত। এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় তৃতীয় রাষ্ট্রের কোনও রকম হস্তক্ষেপ তাতে হোক, সেই বিষয়ে ঘোরতর আপত্তি নয়াদিল্লির।
কিন্তু বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকার নয়াদিল্লির আপত্তিতে কর্ণপাত করছে, গত এক বছরে এমন কোনও নিদর্শন দেখা যায়নি। অপারেশন সিঁদুরের পরে সীমান্তে অশান্তির বাতাবরণ অব্যাহত। আবারও যে কোনও সময়েই আন্তঃসীমান্ত সংঘাত শুরু হতে পারে। এই সময় কৌশলগত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের নৈকট্য ভারতের নিরাপত্তা সংস্থার কাছে বিপদ সংকেত।
২৭ অক্টোবর ঢকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে খবর। প্রায় দু’দশক পর প্রথমবার জেইসি বৈঠক হতে চলেছে ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে।
বলা হচ্ছে, চিন থেকে পণ্য এনে করাচির মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো বা বাংলাদেশ থেকে চিনে পাঠানো আরও সহজ হতে পারে এই চুক্তির পর। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সরকারি জাহাজ সংস্থার মধ্যে চুক্তিপত্র সই হলে, দুই প্রতিষ্ঠান সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুক্ত হতে পারবে। এতে সরাসরি জাহাজ চলাচল আরও সুসংহত ও নিয়মিত হবে এবং তৃতীয় দেশের বন্দরের উপরে নির্ভরতা কমবে বলেও মনে করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গত বছরের নভেম্বরে করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ এসে পৌঁছয়। এটি ছিল পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর পাকিস্তান বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক যোগাযোগ। এই ঘটনার পর পাকিস্তান সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করে।