যৌন হেনস্থা: বর্ধমান মেডিক্যালে কর্মী ধৃত
নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান: ফের এক সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উঠল যৌন হেনস্থার অভিযোগ। এ বার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকা এক রোগিণীর মেয়েকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে হাসপাতালেরই ওয়ার্ডবয় বিশ্বজিৎ দে-কে ধরেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার সঙ্গে ধৃতের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, “অভিযোগকারিণী অভিযুক্তকে চিনিয়ে দিয়েছেন। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে।”
মেডিক্যাল কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরে এক মহিলা হাসপাতালের নতুন ভবনের মহিলা বক্ষ বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। শনিবার থেকে তাঁর কাছে থাকছিলেন তাঁর বিবাহিত মেয়েও। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে আসার পর থেকেই ওই ওয়ার্ডবয় তাঁকে অশালীন ইঙ্গিত করছিল। রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ওয়ার্ডে মায়ের সঙ্গে ছিলেন তিনি। অভিযোগ, আচমকা ঘরে ঢুকে আলো নিভিয়ে দেয় অভিযুক্ত। তার পরেই তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়। চিৎকার করলে, তাঁর মুখ চেপে মারধর করা হয়। কোনও রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে চিৎকার জোড়েন নির্যাতিতা। হাসপাতালের লোকজন পৌঁছে আলো জ্বালার আগেই, পালায় বিশ্বজিৎ।
বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ শহরের বাবুরবাগ এলাকার বাড়ি থেকে সোমবার ভোরে গ্রেফতার করে অভিযুক্তকে। সে এই হাসপাতালে প্রায় ২১ বছর ধরে কাজ করছে। এ দিন বর্ধমান আদালতে তার দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যে ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে, সেখানে ওই রোগিণীই শুধু ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি নজরে আসার পরেই, পুলিশ মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ দিন হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের কর্তারা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। পুলিশ জানায়, ওই ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “আমার কাছে এই ঘটনার ব্যাপারে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে, বিষয়টি দেখব।”
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলা মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “ওই ওয়ার্ডবয়ের মতো ঠিকাকর্মীরা কোনও না কোনও তৃণমূল নেতার ছত্রছায়ায় থাকেন। সারা রাজ্যেই এমন ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে।” জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল প্রামাণিকের অবশ্য বক্তব্য, “হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে বলেই সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনা ধরা পড়েছে।”