রাজ্যকে দায়িত্ব মনে করালেন জ্ঞানেশ
হতে না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। নাম বাদ পড়লে প্রয়োজনে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। এই প্রসঙ্গে ভারতের সংবিধানের ৩২৪(৬) ধারার উল্লেখ করেন জ্ঞানের কুমার। বলেন, ‘‘সংবিধানের অন্তর্গত সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ভোট করাতে দায়বদ্ধ। সেই ভোট প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে যে ভোট কর্মীদের দরকার, তাঁদের দিতে বাধ্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। একই রকম ভাবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাজ্যের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আশা করব, প্রতিটি রাজ্যই নির্বাচন কমিশনের মতো নিজেদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, অতীতে বিহারে এসআইআর ঘোষণার সময়ে জ্ঞানেশ যতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন, আজ সেই আগ্রাসন বিশেষ দেখা যায়নি। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে এসআইআর নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে উস্কানিমূলক কথা বলছিলেন, আজ সে সবের জবাবে সংবিধানের গণ্ডীর মধ্যে থেকে সরাসরি সংঘাত এড়ানোর কৌশল নেন জ্ঞানেশ কুমার। উল্টে সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে রাজ্যকে তার দায়িত্ব মনে করান। এবং বুঝিয়ে দেন, রাজ্য সেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না।
আজ এসআইআর ঘোষণার পরে কিছুটা সুর নরম করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এসআইআর-এর নামে এক জনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ গেলে আমরা দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে যাব।” এর সঙ্গেই দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা কখনওই সহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে ভরসা রাখুন। কোথাও কেউ কোনও রকম সংঘাতে যাবেন না।’’ এরই মধ্যে, আগামী ২ নভেম্বর তামিলনাড়ুতে এসআইআর করার সিদ্ধান্তের মোকাবিলায় নিজেদের কৌশল ঠিক করতে চেন্নাইতে ইন্ডিয়া মঞ্চের বৈঠক ডেকেছেন ডিএমকে নেতৃত্ব।
কমিশন এসআইআর ঘোষণার পরে মঙ্গলবার কলকাতায় সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে চলেছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে বাকি প্রস্তুতি সবিস্তার জানাবেন সিইও মনোজ আগরওয়াল। মঙ্গল বা বুধবারের মধ্যে বাকি জেলাগুলিকেও সর্বদল বৈঠক করে কমিশনের বক্তব্যের নির্যাস সেই জেলার প্রেক্ষিতে জানাতে হবে। বুধবার থেকেই ছাপানো শুরু হবে এনুমারেশন ফর্ম। একই সঙ্গে বিএলও ও অন্য আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে কমিশনের বিধি অনুয়ায়ী। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে ফের এক বার বুথ লেভল এজেন্টদের (বিএলএ) নাম চাওয়া হচ্ছে, দাবি সূত্রের।
সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে সব দল মিলিয়ে ১৮ হাজার ১১৪ জন বিএলএ-র নাম রয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূলের সংখ্যা পাঁচ হাজারের কিছু বেশি। বিজেপির তা প্রায় সাত হাজার।