পাক-অভিনেতাদের ছবিমুক্তি নিয়ে
জটিলতা
ফের প্রশ্নের মুখে এ দেশে পাকিস্তানি শিল্পীদের ছবিমুক্তি। মে মাসের প্রথমেই মুক্তি পাওয়ার কথা ফওয়াদ খান-বাণী কপূর অভিনীত ‘আবির গুলাল’ ছবিটির। অন্য দিকে, জুনে মুক্তি পাবে দিলজিৎ দোসাঞ্জের ‘সর্দারজি থ্রি’। শোনা যাচ্ছে, সে ছবিতে রয়েছেন পাক-অভিনেত্রী হানিয়া আমির। পরিচালক অমিত কাসারিয়ার ‘লাভ স্টোরি অব নাইন্টিজ়’-এ গাওয়ার কথা পাকিস্তানি গায়ক আতিফ আসলামের। এই প্রতিটি ছবিরই ভবিষ্যৎ এ দেশে এখন অনিশ্চিত।
নিরীহ পর্যটকদের মৃত্যুতে সমাজমাধ্যমে শোকবার্তা পোস্ট করেছেন ফওয়াদ, হানিয়া, মাওরা হুসেন-সহ পাকিস্তানি শিল্পীমহলের একাংশ। হানিয়া লিখেছেন, “হত্যাকাণ্ড যেখানেই ঘটুক, তা একই রকম দুঃখের। নিরীহ মানুষ যখন মারা যায়, তখন সে ব্যথা কারও একার নয়। ব্যথায়, শোকে, আশায়— আমরা এক। মানবতাই আমাদের বিবেচ্য।” শান্তিকামনা করে ফওয়াদ লিখেছেন, “পহেলগামে জঘন্য হামলার খবর শুনে দুঃখিত।”
তবে শোকবার্তা এলেও পাকিস্তানি শিল্পীদের এ দেশে কাজ করার বিষয়টিকে মান্যতা দিতে আর রাজি নয় ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ়। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি ত্যাগ করেছে ভারত সরকার। যার জেরে ফের এ দেশে পাক-শিল্পীদের কাজের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা। পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক, টেকনিশিয়ান কাজের ক্ষেত্রে সকলের সঙ্গেই অসহযোগিতা করার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দেশের সমস্ত বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিকেই।
এ দেশে পাক-শিল্পীদের কাজের উপরে নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘ দিন ধরেই বহাল। ২০১৬ সালে ‘কপূর অ্যান্ড সনস’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’-এর মতো হিন্দি ছবিতে শেষ দেখা গিয়েছিল ফওয়াদকে। সে বছরই উরিতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে কাজ করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। পরে ২০২৩ সালে বম্বে হাইকোর্ট এই নিষেধাজ্ঞা খারিজ করেছিল। তবে তার পরেও রাজনৈতিক আপত্তিতে এ দেশে মুক্তি পায়নি পাক-অভিনেতাদের ছবি, যার মধ্যে ছিল ফওয়াদের ‘দ্য লেজেন্ড অব মওলা জাঠ’ ছবিটি। সীমান্তে শান্তি বজায় থাকাকালীনই সম্প্রতি এ দেশে ‘আবির গুলাল’-এর মুক্তি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল শিবসেনা, রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল।
পহেলগামের ঘটনার পরে পাক-শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার ‘অপরাধে’ বাণী, দিলজিতের বিরুদ্ধেও সমালোচনা তীব্র হয়েছে। ‘আবির গুলাল’, ‘সর্দারজি থ্রি’র বয়কটের দাবির পাশাপাশি যে সকল ভারতীয় শিল্পী পাক-শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁদের অন্যান্য কাজ বয়কট করারও দাবি উঠেছে সমাজমাধ্যমে। শোনা যাচ্ছে, আপাতত ‘আবির গুলাল’ রিলিজ়ের তারিখ পিছনোর কথা ভেবেছেন নির্মাতারা। ছবিমুক্তির তারিখ ঘোষণা করলেও ‘সর্দারজি থ্রি’-তে হানিয়া আছেন কি না, বিতর্ক এড়াতে তা স্পষ্ট করেননি দিলজিৎ। তবে পহেলগামের ঘটনার পরে এ অবস্থায় এ দেশে আদৌ পাক-শিল্পীদের গ্রহণযোগ্যতা থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।