মণীশের দেহ নিয়ে মিছিল,
বন্ধে প্রতিবাদ ঝালদার
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
ঝালদা: পহেলগামের বৈসরনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধিকারিক মণীশরঞ্জন মিশ্রকে জঙ্গিদের হত্যার প্রতিবাদে সরব হল তাঁর শহর পুরুলিয়ার ঝালদা। বৃহস্পতিবার সেখানে বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। দুপুরে মণীশের দেহ নিয়ে বেরোয় মিছিল। স্লোগান ওঠে— ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’। তার আগে সকালে ঝাড়খণ্ডের হাটিয়ায় সিআরপি শিবিরে মণীশকে শ্রদ্ধা জানান জওয়ানেরা।
এ দিন সকালে দিল্লি থেকে বিমানে রাঁচী বিমানবন্দরে মণীশের দেহ আনা হয়। মণীশের স্ত্রী জয়া সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পরে দেহের সঙ্গেই জয়া ও তাঁর দুই নাবালক ছেলেমেয়ে ঝালদা পুর-শহরের বাড়িতে ফেরেন।
মণীশকে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই বাড়িতে ভিড় করেছিলেন স্থানীয়েরা। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পুলিশকর্মীরা কফিনবন্দি মণীশের দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। ঘণ্টা দুয়েক চলে শ্রদ্ধা নিবেদন। পরে
পুলিশ ভিড় সরিয়ে পরিবারের লোকেদের মণীশের দেহের কাছে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। মণীশের স্ত্রী বা তাঁর বাবা-মা কেউই কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। মণীশের ভাই বিনীতরঞ্জন বলেন, ‘‘দোষীদের যাতে চূড়ান্ত শাস্তি হয়, সরকারের কাছে সেই দাবি জানাচ্ছি।’’
নাগরিক মঞ্চের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধে সমাজের সর্ব স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাড়া দিয়েছিলেন। সকালে শুনশান ছিল পথ।
দুপুরের ঠা-ঠা রোদের মধ্যে মণীশের দেহ নিয়ে মিছিল বেরোতেই পথ ঢেকে যায় ভিড়ে। দীর্ঘ জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিলে হাঁটেন আট থেকে আশি। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো থেকে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো প্রমুখ। সুকান্ত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। ঘটনায় জড়িত কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’
বিকেল নাগাদ মায়া সরোবরে শ্মশানে শেষকৃত্যের আগে মণীশরঞ্জনকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। নাগরিক মঞ্চের তরফে ঝালদার উপপুরপ্রধান সুদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘বন্ধ পালনের মাধ্যমে ঝালদার মানুষ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের চরম শাস্তি দাবি করেছেন।’’