ভারতকে এ বার পাল্টা হুমকি দিল পাকিস্তান
ইসলামাবাদ, ২৫ এপ্রিল: পহেলগাম সন্ত্রাসের সঙ্গে পাকিস্তানি যোগ আছে, ভারতের এই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন ও অসার’ বলে দাবি করে আজ এক প্রস্তাব গৃহীত হল পাকিস্তান সেনেটে। গতকাল ভারতের বিবৃতি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের নেতৃত্বে বিশেষ বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিশন। তার
পরেই আজ পাক সেনেটে এই প্রস্তাব গৃহীত হল।
পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে আজ এই ভারত-বিরোধী প্রস্তাবটি পেশ করেন সে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশক দার। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত পাকিস্তান। জল-সন্ত্রাস বা সামরিক উস্কানি, সব কিছুর মোকাবিলা করতেই সক্ষম আমরা।’ ভারতের সিন্ধু নদ চুক্তি থেকে সরে আসার পদক্ষেপকে ‘সামরিক অভিযানের সমতুল্য’ বলা হয়েছে এই প্রস্তাবে। বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার জন্য ভারত সরকার যে পরিকল্পিত প্রচার চালাচ্ছে, আমরা তার নিন্দা করি। এটা ভারতের খুব চেনা ছক। কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা হলেই তারা সেটাকে ব্যবহার করে তাদের
সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’
কক্ষের সদস্যদের সামনে উপ-প্রধানমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন রাষ্ট্রের ২৬ জন কূটনীতিককে ডেকে ভারতের এই অভিযোগের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তাঁরা। ইশকের কথায়, “ভারতের যে কোনও রকম সামরিক দুঃসাহসের জবাব দিতে পাকিস্তানের
সামরিক বাহিনী প্রস্তুত। ভারতের উচিত এই ভিত্তিহীন দোষারোপ বন্ধ করে পহেলগামে জঙ্গি হামলার মতো ঘটনাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করা।”
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আজ জানানো হয়েছে, তাদের দেশের বিরুদ্ধে যদি ভারত কোনও সামরিক পদক্ষেপ করে, তা হলে শিমলা চুক্তির মতো বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা থেকে সরে আসার কথা ভাবতে পারে পাকিস্তান। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র শফকত আলি জানিয়েছেন, “দু’দেশের সম্পর্ক দাঁড়িয়ে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং দু’দেশের মধ্যে হওয়া কিছু চুক্তির উপরে।
যদি একটি দেশ বুঝিয়ে দেয় যে, তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী নয়, তা হলে সেটা খুবই দুঃখের হবে। তখন আমাদেরও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ভাবতে হবে।”
এ দিনই আবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করে বসেন, “বছরের পর বছর আমেরিকা তার নোংরা কাজ পাকিস্তানকে দিয়ে করিয়েছে।” যদিও তাঁর বক্তব্যের পক্ষে কোনও যুক্তি দেননি তিনি। পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেয়, আমেরিকা ও ভারতের এই অভিযোগের কথা তুলে আসিফকে আজ প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকেরা। সেই প্রশ্নের উত্তরেই আসিফ বলেন, “তিন দশক ধরে আমেরিকা আমাদের দিয়ে তাদের নোংরা পরিষ্কার করিয়েছে।” সাংবাদিক বৈঠকে আসিফ আরও দাবি করেন, “পাকিস্তানে এখন লস্কর-ই-তইবার কোনও অস্তিত্ব নেই।” এই লস্করেরই ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) পহেলগাম হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা