প্রকৃত আয় না বাড়ায় ধাক্কা চাহিদায়: কংগ্রেস
নয়াদিল্লি, ২৬ এপ্রিল: দেশে কাজের সুযোগ তৈরির উপরে যে দিন জোর দেওয়ার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সে দিনই ঢিমে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে তোপ দাগল কংগ্রেস। মারুতি-সুজ়ুকি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আর সি ভার্গবের মন্তব্য তুলে ধরে বিরোধী দল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্স-এ জানিয়েছেন, দেশের উঁচু তলার মাত্র ১২% পরিবার গাড়ি কিনতে পারে। দেশে চাহিদা বৃদ্ধির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধি বাদে প্রকৃত আয় থমকে থাকাই অর্থনীতির ঝিমুনির অন্যতম কারণ। শনিবার রোজগার মেলার উদ্বোধনে মোদীর যদিও দাবি, আগামী দিনে দেশে আরও বেশি করে কাজের সুযোগ তৈরি হবে। উদ্যোগপতি হওয়ার দৌড়ে শামিল হবেন তরুণ প্রজন্মের আরও বেশি মানুষ।
অতিমারির পরে ভারত-সহ সারা বিশ্বে অসাম্য বাড়ছে বলে জানাচ্ছে উপদেষ্টা সংস্থা এবং অর্থনীতিবিদেরা। কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা কৌশিক বসু, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন-সহ অনেকেই ভাল কাজ তৈরির উপরে জোর দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের হাতে বাড়তি খরচের টাকা না থাকলে চাহিদা বৃদ্ধি হবে না বলেও সতর্ক করছে বিভিন্ন মহল।
এই অবস্থায় শুক্রবার ভার্গবের বক্তব্য ছিল, বেড়েছে সংসার ও অন্যান্য খরচ। অথচ ছোটগাড়ির দাম বেড়েছে প্রায় ৯০,০০০ টাকা। ফলে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করছাড়ও তার চাহিদা বাড়াতে পারবে না। উপরন্তু দেশের মোট জনসংখ্যার ১২% মানুষ ১২ লক্ষের বেশি রোজগার করেন। বাকি ৮৮ শতাংশের পক্ষে ১০ লক্ষ বা তার বেশি দামের গাড়ি কেনা সম্ভব নয়। অথচ ছোট গাড়ির বিক্রির সঙ্গে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গতিপথ জড়িয়ে। কেন্দ্রের উচিত এ দিকে নজর দেওয়া।
এই মন্তব্য তুলে ধরেই রমেশের দাবি, পহেলগামের জঙ্গি হামলার ঘটনায় স্তব্ধ সারা দেশ। কিন্তু তার মধ্যেও ভুললে চলবে না, মারুতি-সুজ়ুকির চেয়ারম্যান কী বলেছেন। অর্থনীতিতে তার প্রভাব কতটা। তাঁর দাবি, ভার্গবের বক্তব্যের স্পষ্ট যে উঁচুতলার ১২% মানুষই মূলত গাড়ি কিনছেন, যাঁদের আয় ১২ লক্ষের বেশি। ছোট গাড়ির বিক্রি ৯% হারে কমছে। যাত্রী গাড়ি বিক্রি ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৪-২৫ সালে বেড়েছে মাত্র ২%। এ বছরেও তা ১%-২% হবে বলে ধারণা। এর মূল কারণ সমাজের প্রায় সব স্তরে প্রকৃত আয় এক জায়গায় থমকে থাকা।
মোদীর যদিও দাবি, আইএমএফ বলেছে বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়বে ভারতের অর্থনীতি। প্রায় সব ক্ষেত্রেই মাথা তুলবে কাজের সুযোগ। গাড়ি ও জুতোর মতো ক্ষেত্রে উৎপাদন ও রফতানি রেকর্ড ছুঁয়েছে। বিপুল সংখ্যায় কাজ তৈরি হচ্ছে। সর্বত্রই মহিলাদের যোগদান বেড়েছে। কেন্দ্র কাজ বাড়াতে অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, এই সমস্ত কাজের মধ্যে কতটা ভাল কাজ এবং বেতনের অঙ্ক চাহিদা বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।
সংবাদ সংস্থা