দেশপ্রেমের বেসাতি
‘রাজনীতি ও খেলার প্রতিভা’ (২২-৩) শীর্ষক সায়নদেব চৌধুরীর প্রবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা। ভুবনজয়ের সাফল্যই যে ভারতে ক্রিকেটকে ‘গণ হিস্টিরিয়া’য় পরিণত করেছে, তা নিশ্চিত। সর্বোপরি প্রচারের আলো খেলাটির দিকে ঘুরে যাওয়ার পর, আন্তর্জাতিক রথী-মহারথী বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি ভারতের মতো বৃহত্তম বাজারের দখল নেওয়ায় দেশের ক্রীড়ানায়করা এক-এক জন ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্রে পরিণত হয়েছেন। ভারতের ক্রিকেট দলকে যেন দেশের সামরিক বাহিনীর সমতুল্য মনে করা হচ্ছে। আর ভারত কোনও ট্রফি জয় করলে দলের এক-এক জন ক্রিকেটার দেশের অতন্দ্র প্রহরীর সম্মান পাচ্ছেন।
এক সময় ‘স্পোর্টসম্যান স্পিরিট’-এর জন্য মন জিতে নিয়েছিল অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ের নেতৃত্বাধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি। এক কালে বর্ণবিদ্বেষের জেরে নির্বাসিত দক্ষিণ আফ্রিকা সেই সময় যেন ক্রিকেট ভুবনে রাজার আসনটি ছিনিয়ে নিতে উদগ্র ছিল। আমি দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সেই মনোভাব তথা হ্যান্সির খেলার ভক্ত ছিলাম। বহু সময় অতিবাহিত করেছি ওঁদের খেলা দেখে। পরবর্তী কালে ক্রিকেটের কলঙ্কজনক অধ্যায়টির সঙ্গে যখন ক্রোনিয়ের নাম জুড়ে গেল, আশাহত হয়েছিলাম। নির্মল আনন্দদায়ক ক্রিকেটকে আর বিশ্বাস করা যাচ্ছিল না। মনে হয়েছিল— এ কি জুয়া খেলা চলছে? অর্থলাভের এত বাসনা? আর বর্তমান সময়ে তো সেই অর্থ আকাঙ্ক্ষা অন্য রূপে ফুলেফেঁপে উঠেছে। এখন ভারত সব দিক থেকেই মহান! আইপিএল নামক বাণিজ্য সফল ক্রিকেটের অঙ্গনটি ক্রিকেটারদের কাছে অভাবনীয় অর্থ রোজগারের মঞ্চ, দক্ষতা যাচাই বা শাণ দেওয়ার প্রসঙ্গটি গৌণ।
সঞ্জয় রায়
দানেশ শেখ লেন, হাওড়া