১০ মে: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইপিএলের ভাগ্য কী হতে চলেছে?
গত কাল জানানো হয়েছিল, এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে আইপিএল। শনিবার দু’দেশের সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার পরে আইপিএল দ্রুত হওয়া নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল ভারতীয় বোর্ড। কিন্তু রাতে ফের পাকিস্তানের তরফে হামলা হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আবার বদলে
যেতে পারে।
তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইপিএল করতে মরিয়া হয়ে আছে। আইপিএল বন্ধ থাকার কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থাকা সকলের। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্ল এ দিন জানিয়েছেন, রবিবার গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকের পরে ঠিক হতে পারে নতুন ক্রীড়াসূচি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই ভিডিয়োকে রাজীব শুক্ল বলেন, ‘‘ভারতীয় বোর্ড এবং আইপিএল
গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা রবিবার বৈঠকে বসবে। দেখতে হবে, কী ভাবে বাকি প্রতিযোগিতা শেষ করা যায়।’’ তবে রাজীব শুক্ল যখন এই কথা বলেন, তখনও নতুন ভাবে হামলা হয়নি। শোনা যাচ্ছে, পরের সপ্তাহে আইপিএল শুরু করার চেষ্টা হবে। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই আইপিএলের ভাগ্য ঠিক হবে।
ভারতীয় বোর্ড কিন্তু আইপিএল এ দেশেই শুরু করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। শোনা যাচ্ছে, ধর্মশালায় ব্ল্যাকআউটের জন্য বাতিল হওয়া পঞ্জাব কিংস-দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচ দিয়েই শুরু হতে পারে দ্বিতীয় দফার আইপিএল। বোর্ড সূত্রে খবর, দলগুলিকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। সম্ভবত ম্যাচের কেন্দ্র বদল করে দু’সপ্তাহের মধ্যে আইপিএল শেষ করা হবে। আইপিএলের সব অংশীদারের মতামত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলি হতে পারে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই আর হায়দরাবাদে। ভেসে উঠেছে কলকাতার নামও।
সমস্যা হল, বিদেশি ক্রিকেটাররা সবাই দেশে ফিরে গিয়েছেন। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফ নিরাপদে বেঙ্গালুরুতে ফিরে এসেছে। তার পরে ওরা যে যার দেশ এবং শহরের দিকে রওনাও দিয়ে দিয়েছে।’’ কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটাররাও সবাই ফিরে গিয়েছেন। লখনউ সুপার জায়ান্টসের তরফে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানানো হয়েছে, তাদের দলের বেশির ভাগ বিদেশি ফিরে গেলেও কয়েক জন রয়ে গিয়েছেন। একই পরিস্থিতি বেশিরভাগ দলের। এই অবস্থায় বিদেশি ক্রিকেটারদের কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে? ধুমল আশাবাদী, বিদেশি ক্রিকেটাররা আবার ভারতে চলে আসবেন। কারণ, তাঁরা আইপিএল খেলতে আগ্রহী।
চর্চা চলছে খেলা বন্ধের কারণে ম্যাচ প্রতি কত টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতের, তা নিয়ে। ক্ষতি তো শুধু ভারতীয় বোর্ডের নয়। প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজ়ির মালিক, সম্প্রচারকারী সংস্থা, স্পনসর, সাধারণ ব্যবসায়ী, হকারদেরও। একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ক্ষতির পরিমাণটা বিপুল। ম্যাচ প্রতি আনুমানিক ১০০ থেকে ১২৫ কোটি টাকা! এমনিতে আইপিএলের খেলা বাকি আছে এখনও ১৬টি। যার মধ্যে প্লে-অফের চারটে ম্যাচ।
এরই মাঝে আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলো করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও (ইসিবি)। এ ব্যাপারে বোর্ড সচিবের সঙ্গে কথাও বলেছেন ইসিবির অন্যতম প্রধান কর্তা রিচার্ড গোল্ড। ইংল্যান্ড প্রচারমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইসিবি-র প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের মাটিতে আইপিএল সম্পূর্ণ করার কথা। এমনিতে ১০ দলের আইপিএলের এখনও বাকি ১৬টি খেলা। ইসিবি জানিয়েছে, এই ক’টি খেলা সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডে আয়োজন করতে তাদের কোনও সমস্যা হবে না। যদিও সেই পরিস্থিতি আর তৈরি হবে বলে মনে হয় না।
ধর্মশালায় ম্যাচ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে সেখানে আটকে পড়েছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্রিকেটাররা। সেখান থেকে ক্রিকেটারদের বার করে আনার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। উনা স্টেশন থেকে দিল্লিতে ফেরেন ক্রিকেটাররা। সেই সময় ফ্যাফ ডু’প্লেসির উদ্বিগ্ন অভিব্যক্তিতেই বোঝা যাচ্ছিল, তাঁরা স্বস্তিতে নেই। কুলদীপ যাদব থেকে শুরু করে প্রাক্তন ক্রিকেটার অঞ্জুম চোপড়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার মার্কো জানসেনরা একসঙ্গে সেই বিশেষ ট্রেনে করে ফেরেন। এর পরেই বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান স্পিনার কুলদীপ যাদব।