জঙ্গি গ্রেফতারির প্রেক্ষিতে
আবারও নজরে খাগড়াগড়
সৌমেন দত্ত
বর্ধমান: ফের নজরে খাগড়াগড়।
জঙ্গি সন্দেহে তিন জনকে ধরেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। সেই সূত্রে নজরদারি বেড়েছে পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়-সহ বেশ কিছু এলাকাতেও। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে এসটিএফ ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা দফতর (ডিআইবি) খোঁজখবর শুরু করেছে। ভাড়াটেদের সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে বিভিন্ন থানাও। জেলার সীমান্তবর্তী ‘ছায়া-অঞ্চল’ (শ্যাডো জ়োন) বলে পরিচিত ফুটিসাঁকো মোড়েও নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ।
২০১৪ সালের অক্টোবরে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরে, সেই ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ পাওয়া যায়। মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ায় খোঁজ মেলে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। তার পর থেকে গত ১১ বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি কার্যকলাপ বা জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতারির ঘটনা ঘটলে, অনেক ক্ষেত্রেই খাগড়াগড়-শিমুলিয়ার নাম উঠে এসেছে।
খাগড়াগড়ের উগ্রপন্থীদের মতোই জঙ্গি মতাদর্শ প্রচার, বিস্ফোরক তৈরির ছক কষার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যে সম্প্রতি ধৃত তিন সন্দেহভাজন জঙ্গির বিরুদ্ধে। ধৃতদের মধ্যে দু’জন আবার লাগোয়া জেলা বীরভূমের। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে জেলার কোন কোন থানা এলাকায় বাড়তি নজর দেওয়ার প্রয়োজন, তার একটি তালিকা জেলা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে এসটিএফ।
গোয়েন্দাদের দাবি, এসটিএফ মেমারি, রায়না, মন্তেশ্বর ও কাটোয়া ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গায় নজর দিতে বলেছে। নজরে রয়েছে বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া শহর, আউশগ্রাম, গলসি, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গাও। সাদা পোশাকের পুলিশকেও টহল দিতে বলা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তার কথায়, “কালনা-হুগলি সীমান্ত, গলসি-আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম-কাটোয়া-পূর্বস্থলীতে নদিয়া সীমান্ত নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে।” অনুপ্রবেশকারী কেউ লুকিয়ে থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে গলসি থেকে এক অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
এসটিএফের এক কর্তার দাবি, “পূর্ব বর্ধমানে জঙ্গিদের ঘাঁটি গাড়ার পুরনো প্রবণতা মাথায় রেখেই কয়েকটি জায়গায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে।” জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সূত্রের দাবি, খাগড়াগড় মামলায় যে ১২ জন সাজাপ্রাপ্ত জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে, তাদের মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের দু’জন রয়েছে। তাদের গতিবিধির উপরেও নজর রয়েছে বলে খবর।