রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৯
ইস্তানবুল, ১৭ মে: এক দিকে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে বৈঠকে বসেছেন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গেই ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের উপরে ফের হামলার অভিযোগ উঠেছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। আজ ভোরে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের সুমিতে একটি যাত্রিবাহী ভ্যানের উপরে আছড়ে পড়ে রুশ ড্রোন। তাতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জন যাত্রীর। নিহতেরা প্রত্যেকেই সাধারণ নাগরিক। এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেনের মতো দেশের প্রধানদের পাশে নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপরে আরও চাপ বাড়ানোর রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সোমবার এ নিয়ে কথা বলতে ফোন করবেন পুতিনকে। তার পর তিনি জ়েলেনস্কি ও নেটো সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলতে চান।
তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত কাল ইস্তানবুলে মুখোমুখি হন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দুই দেশ। তবে জানানো হয়েছে, আপাতত দু’পক্ষই বন্দি বিনিময় নিয়ে সদর্থক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পেরেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, খুব শীঘ্রই দুই দেশ ১ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে জানিয়েছেন দু’দেশের প্রতিনিধিরা। গত কালের সেই বৈঠক দেড় ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়নি। পুতিন নিজে ইস্তানবুল আসতে রাজি হননি। জ়েলেনস্কিও এখন ইউরোপীয় রাজনীতি সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে অ্যালবেনিয়ার টিরানায় রয়েছেন। ফলে দুই রাষ্ট্রপ্রধানই নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন ইস্তানবুলে। বৈঠকে উপস্থিত দু’দেশের প্রতিনিধিরা বারবারই জানিয়েছেন, নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিই তাঁদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো এখনও সম্ভব না হলেও বৈঠক নিয়ে সন্তোষ জানান রুশ প্রতিনিধি ভ্লাদিমির মেদিনস্কি। তাঁর কথায়, ‘‘মোটের উপরে বৈঠক নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এই ধরনের আলোচনা আরও প্রয়োজন।’’ দু’দেশের নেতাদের আলোচনার উপরে জোর দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা মধ্যস্থতাকারী রুস্তেম উমেরভ-ও।
তবে সুমিতে রুশ হামলার ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ জ়েলেনস্কি। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, সকলে সাধারণ নাগরিক। রাশিয়া খুব ভাল করেই জানত কোন যানের উপরে তারা আঘাত হানছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে।’’ জ়েলেনস্কির বক্তব্য, রাশিয়ার উপরে আরও বেশি করে চাপ তৈরি না করলে তারা এই ধরনের হত্যালীলা থামাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আরও কঠিন নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাশিয়ার উপরে চাপ বাড়ানো প্রয়োজন। চাপ না বাড়ালে কূটনীতির ভাষাও রাশিয়া বুঝবে না।’’
সংবাদ সংস্থা