রাশিয়ায় ড্রোন হানা, দেরি ভারতীয় প্রতিনিধিদের বিমানের
মস্কো ও নয়াদিল্লি, ২৩ মে: ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতে ড্রোনের লড়াই দেখেছে বিশ্ব। এ বার রাশিয়ায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জেরে মস্কো পৌঁছতে দেরি হল ভারতীয় সর্বদলীয় প্রতিনিধিমণ্ডলীর সদস্যদের। পহেলগাম হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে দিল্লির অবস্থান জানাতে রাশিয়া গিয়েছে ওই প্রতিনিধিমণ্ডলী। অন্য দিকে বুধবার প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মধ্যে শ্রীনগরগামী ইন্ডিগোর উড়ানকে পাকিস্তান তাদের আকাশসীমায় ঢোকার অনুমতি দেয়নি বলে জানাল উড়ান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিজিসিএ ও ভারতীয় বায়ুসেনা। ওই উড়ানে ছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। তাঁরা পাকিস্তানি গোলাবর্ষণের ফলে জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন।
ডিজিসিএ-র তরফে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার কাছেও পথ বদলের অনুমতি চেয়েছিল বিমানটি। কিন্তু তারাও সেই অনুমতি দেয়নি। বায়ুসেনার তরফে পাল্টা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই বিমানটিকে নিয়ম মেনে শ্রীনগরে নামতে সাহায্য করেছিল তারা। শ্রীনগরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বায়ুসেনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্য দিকে পহেলগাম হামলার কয়েক দিন পরেই পাক বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে ভারত। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে পাকিস্তান। সেই ব্যবস্থা এখনও বহাল রয়েছে।
আজ মস্কো পৌঁছেছে ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল। কিন্তু ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জেরে মস্কোর ডমোডেভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ থাকে। রাশিয়ায় ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, প্রতিনিধিরা নিরাপদেই পৌঁছেছেন। এই দলটি রুশ উপ-বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রে রুডেঙ্কো, আইনসভা ডুমার সদস্য, বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আলোচনায় সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের ঐক্যবদ্ধ সঙ্কল্পের কথা তুলে ধরা হবে।
বুধবার শ্রীনগরে যাওয়ার পথে প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মধ্যে পড়ে ইন্ডিগোর ৬ই২১৪২ নম্বর উড়ান। তাতেই ছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। শ্রীনগরে নামার পরে সমাজমাধ্যমে তাঁদের অনেকেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বিমানটির নাক ভেঙে গিয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ডিজিসিএ। উড়ানটির চালকদের সঙ্গে কথা বলেছে তারা। আজ এক বিবৃতিতে ডিজিসিএ জানিয়েছে, ওই বিমানটি ছিল একটি এয়ারবাস এ৩২১নিয়ো। ৩৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ওড়ার সময়ে পঠানকোটের কাছে সেটি প্রবল ঝড়ের মধ্যে পড়ে। শিলার আঘাত লাগে বিমানে। বিমানের পরিচালনার ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। এর পরে বিমানচালকেরা শ্রীনগর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে বিপদসঙ্কেত পাঠান। ঝড় এড়াতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দিকে এগোনোর অনুমতি চান তাঁরা। কিন্তু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সেই অনুমতি দেয়নি।
এর পরে বিমানচালকেরা পাকিস্তানের লাহোর বিমানবন্দরের কাছে পাক আকাশসীমায় ঢোকার অনুমতি চান। কিন্তু সেই অনুমতিও দেওয়া হয়নি। ফলে বজ্রগর্ভ মেঘের মধ্য দিয়েই এগোতে হয় তাঁদের। ডিজিসিএ জানিয়েছে, শ্রীনগর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রাডারের মাধ্যমে নিরাপদে বিমানটির শ্রীনগর বিমানবন্দরে নামার ব্যবস্থা করে।
পরে বায়ুসেনার তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাক আকাশসীমা বন্ধ ছিল। সে কথা মাথায় রেখেই বিমানচালকদের পরামর্শ দেন শ্রীনগর বা নর্দার্ন এরিয়া কন্ট্রোলের কর্মীরা। বিমানচালকেরা লাহোরের দিকে যাওয়ার অনুরোধ জানান। লাহোরকে সেই অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু লাহোর অনুমতি দেয়নি।
সংবাদ সংস্থা