বাংলাদেশে লোক ফেরানোর চেষ্টা ব্যর্থ বিএসএফের
নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি, ১ জুন: গত কয়েক দিনে অসম-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যত মানুষকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল বিএসএফ, তাদের কোনওভাবেই গ্রহণ করল না বিজিবি। ভারতীয়দের পুশ-ব্যাক রুখতে ওপারে গ্রামবাসীরা মানব-শৃঙ্খল তৈরি করে রাত-পাহারা দিচ্ছেন। চাপের মুখে দফায়-দফায় সবাইকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে বিএসএফ। ফলে, ভারতের এই ‘গায়ের জোরে বিতাড়ন নীতি’ বড় ধাক্কা খেল।
বাংলাদেশ প্রথম থেকেই বলে আসছে, নিয়ম না মেনে, নাগরিকত্ব যাচাই না করে লোক পাঠালে তারা নেবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের চাপ ও কেন্দ্রের নির্দেশের পরে কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই পুলিশ ও বিএসএফ অসম থেকে দলে দলে লোক ওপারে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ অনড় থাকায় বিএসএফের চেষ্টা সফল হল না। বিএসএফ এখনও কিছু স্বীকার না করলেও পুশ-ব্যাক করা সবাইকে বাড়ি ফেরত পাঠাচ্ছে নিঃশব্দে। মুখে কুলুপ পুলিশেরও। অবশ্য ফেরত আসা কারও মুখ বন্ধ করানো যাচ্ছে না। তাই মুখ রক্ষা হচ্ছে না সরকারেরও। অবশ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ যে এ ভাবে লোক ফেরত নেবে না- তা জানাই ছিল। কিন্তু সে কথা বললে তিরস্কার
জুটছিল সুপ্রিম কোর্টে। তাই এ বার ঘোষিত বিদেশিদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে ও ফেরত এনে সরকার বল বাংলাদেশ ও সুপ্রিম কোর্টের দিকে ঠেলতে পারবে। বলতে পারবে, আদালতের নির্দেশ মেনে বাংলাদেশিদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তারা ফেরত নেয়নি।
গত কয়েক দিনে লালমনিরহাটের তিন উপজেলার ছয় সীমান্ত দিয়ে প্রায় ৭০ জনকে পুশ-ব্যাক করে বিসএফ। মঙ্গলবার থেকে এ নিয়ে চলছে টানাপড়েন। মানকাচর-আদিতমারি সীমান্তে দুই দফার পতাকা বৈঠক ও ব্যাটেলিয়ন পর্যায়ের বৈঠকে বিজিবি সাফ জানিয়ে দেয় পুশ-ব্যাক করা কেউ বাংলাদেশি নন। তাঁরা সকলেই অসমিয়া। ফলে বিএসএফ বাধ্য হয়ে সকলকে ফেরত নেয়। বাংলাদেশের তরফে অভিযোগ, এরপরেও বিএসএফ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে সীমান্তের আলো নিভিয়ে ফের অনেককে বাংলাদেশে ঢুকিয়েছে। ৪ মে থেকে এ সপ্তাহ পর্যন্ত অন্তত সাড়ে ন’শো মানুষকে পুশ-ব্যাক করেছে বিএসএফ। শুক্রবার কাচকাটায় শোভারকুটি ও শিপেরহাট সীমান্তে ভারতীদের প্রবেশ রুখতে বিজিবি, ভিডিপি ও গ্রামবাসীরা প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মানবপ্রাচীর গড়ে তুলেছিল। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে ধুবুড়ির গোলকগঞ্জ থেকে আনা ৫০/৬০ জনকে ফাইসকারকুটি সীমান্তে আলো বন্ধ করে পুশ-ব্যাক করার চেষ্টা করে বিএসএফ।