বিচারাধীন বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যু হাওড়া জেলে
নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া জেলের মধ্যে এক বিচারাধীন বন্দির
অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। রবিবার সকালের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বিচারাধীন বন্দির নাম মহম্মদ আনসারি (৩৫)। এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ জেলের গারদের ভিতরে গলায় গামছা বাঁধা অবস্থায়
তাঁকে ঝুলতে দেখা যায়। জেল কর্তৃপক্ষ ওই বন্দিকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের পরিজনদের অবশ্য অভিযোগ, আনসারিকে পিটিয়ে মেরে গলায় গামছা দিয়ে গারদে ঝুলিয়ে
দেওয়া হয়েছে। নিরপেক্ষ পুলিশি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বছর চারেক আগে শালিমার স্টেশনের কাছে তোলাবাজি নিয়ে গোলমালের জেরে ভোলা
রায় নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ভোলাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মহম্মদ আনসারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আনসারি পেশায় টোটোচালক। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন এবং খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করা হয়।
তখন থেকে ওই ব্যক্তি হাওড়া জেলে বন্দি ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, হাওড়া জেল কর্তৃপক্ষ
তাদের জানিয়েছেন, এ দিন সকালে ওই বন্দি একটি গামছা গলায় পেঁচিয়ে গারদে ঝুলে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তা দেখতে পেয়ে আনসারিকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা
হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এর পরেই বন্দির পরিবারকে ঘটনার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
খবর পাওয়ার পরে আনসারির পরিবারের লোকজন হাওড়া জেলা হাসপাতালে ছুটে আসেন। হাসপাতালের মধ্যেই তাঁরা জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের
অভিযোগ, আনসারিকে পিটিয়ে মেরে গামছার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মহম্মদ আনসারির শ্যালিকা সাইলা খাতুন বলেন, ‘‘ওঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেল
খাটানো হচ্ছিল। বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান আছেন। জেলের লোকেরা বলছেন, আনসারি আত্মহত্যা করেছেন। আমাদের প্রশ্ন,
ওই সেলে আরও তিন জন আসামি ছিলেন, তাঁরা কেউ কিছু দেখলেন না? দেখেও কিছু করলেন না?’’
এই রহস্য-মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ পুলিশি তদন্ত জানিয়েছেন পরিজনেরা।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবে না।’’