অস্ত্র ভাড়া দেওয়ার জন্যই কি গাড়ির ব্যবসা ‘নেপালি’র?
নিজস্ব সংবাদদাতা
গাড়ি ভাড়ায় খাটানোর ব্যবসার আড়ালেই কি চলত অস্ত্র ভাড়া দেওয়ার কারবার? কামারহাটি পুরসভার সীমানা এলাকা, পানিহাটির মৌলানা সেলিম রোডের বাড়ি থেকে অস্ত্র-ভান্ডার উদ্ধার হওয়ার তদন্তে নেমে এটাই এখন ভাবাচ্ছে
তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, ওই বাড়ির মালিক, ধৃত নইম আনসারি ওরফে নেপালিকে জেরা করে সেই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। যদিও কেন ওই বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র মজুত করে রাখা হয়েছিল, সেই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি।
সূত্রের খবর, সোমবার রাতে নেপালির বাড়ি থেকে যে চারটি বড় দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, চপার, কুঠার ও তলোয়ার উদ্ধার হয়েছিল, তার সবগুলিই ঝাঁ- চকচকে। দেখে মনে হবে, নতুন তৈরি করা হয়েছে। অথচ সূত্রের খবর, অস্ত্রগুলি অনেক দিন ধরেই নেপালির কাছে ছিল বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। এমনকি, এলাকায় শাসকদলের কর্মী বলে পরিচিত বছর সাতান্নর ওই ব্যক্তি সেগুলি ভাড়ায় খাটাত বলে জানা যাচ্ছে। এই রহস্যের নেপথ্যে কী রয়েছে? প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের কাছে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে বলেই খবর। সেগুলি একটি সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
প্রশ্ন উঠছে, ভাড়ায় খাটানো গাড়িতে করেই কি আগ্নেয়াস্ত্র বা ধারালো অস্ত্র অন্যত্র পাঠানো হত? সেগুলি কি একই ভাবে ফিরে আসত নেপালির ডেরায়? তার পরে ফের ভাড়া দেওয়ার জন্য অস্ত্রগুলিকে পুনরায় রক্ষণাবেক্ষণ করে রাখা হত কি? নেপালির দোতলা বাড়ির নীচেই ছিল ঝালাইয়ের কারখানা। দীর্ঘদিন বন্ধ ওই কারখানার ভিতরে ব্যবহৃত অস্ত্রকে পুনরায় চকচকে করার কাজ চলত কিনা, তা নিয়েও খটকা তৈরি হয়েছে। সমস্ত দিকই পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে খবর।
অন্য দিকে, আরও কিছু বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে পুলিশের। অন্য একটি সূত্রের খবর, সম্প্রতি ভিন্ রাজ্যের এক নিকটাত্মীয়ের থেকে ওই অস্ত্র এসেছিল নেপালির ডেরায়। কিন্তু কেন?
তদন্তে এই জটও তদন্তকারীরা কাটানোর চেষ্টা করছেন বলে খবর। মঙ্গলবার রাতে খড়দহ থানায় গিয়ে নেপালিকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন ব্যারাকপুরের নগরপাল অজয় ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও অস্ত্র মজুত রয়েছে কিনা, সে বিষয়ে পুলিশ নিয়মিত খোঁজ-খবর চালাচ্ছে। তাতেই সাফল্য মিলেছে। অস্ত্র সরবরাহের সূত্র কী, সেটা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ বিভিন্ন সূত্রের আরও খবর, নেপালির ডেরায় শুধু বাজেয়াপ্ত হওয়া অস্ত্রই নয়, আগে আরও অস্ত্র মজুত ছিল। সেগুলি তারই কোনও এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে কিনা, সেই দিকটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।