কলেজেই গণধর্ষণ
আটক করে ধর্ষণে ধৃত নেতা-সহ ৩
নিজস্ব সংবাদদাতা
সরকারি হাসপাতালের পরে এ বার সরকারি কলেজ। গত অগস্টে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয় গোটা দেশ। এ বার সেই কলকাতার সরকারি আইন কলেজের ভিতরেই আইনের পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল ওই কলেজেরই এক প্রাক্তন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সে আবার ওই কলেজের টিএমসিপি নেতা এবং সেই সূত্রে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে ২০২৪ সাল থেকে সেখানে কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে! তার দুই সঙ্গীও এই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। নির্যাতিতার অভিযোগ এবং তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ গণধর্ষণের মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
কসবা থানায় করা অভিযোগে নির্যাতিতার দাবি, রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি ওই নেতার পায়ে ধরেছেন। আত্মরক্ষার্থে নেতাকে ঠেলে সরিয়ে দিতে গেলে তাঁকে বেধড়ক মারা হয়েছে। কলেজের মূল ফটক আটকে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে ঢুকিয়ে তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে পেটানো হয়েছে। তাঁর মাথায় চোট লেগেছে। অভিযোগ, কার্যত নিঃসাড় অবস্থাতেই তাঁকে এর পরে ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই সময়ের দু’টি ভিডিয়ো তুলে রেখে ‘কাউকে কিছু বললে ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হবে’ বলে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি, কেউ জানলে নির্যাতিতার প্রেমিককে খুন করার ও তাঁর বাবা-মাকে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে গত বুধবারের এই ঘটনায় ধৃত ছাত্রনেতা তথা কলেজের কর্মীর নাম মনোজিৎ মিশ্র ওরফে ম্যাঙ্গো ওরফে জিৎ। বছর ত্রিশের মনোজিৎ কালীঘাটের বাসিন্দা। তার সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছে তিলজলার বাসিন্দা জাইব আহমেদ এবং হাওড়া চ্যাটার্জিহাটের বাসিন্দা প্রমিত মুখোপাধ্যায় নামে ওই কলেজেরই আরও দুই পড়ুয়াকে। ধর্ষণের সময়ে এরা সহায়তা করেছে এবং ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিল বলে নির্যাতিতার অভিযোগ। পুলিশ এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭০ (১) গণধর্ষণ, ১২৭ (২) আটকে রাখা এবং ৩ (৫) সম্মিলিত অপরাধের ধারায় মামলা রুজু করেছে। শুক্রবার ধৃতদের কোর্টে তোলা হলে বিচারক ১ জুলাই পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষালাভের জন্য যাওয়া পড়ুয়াকেও গণধর্ষণের মুখে পড়তে হওয়ায় এখন নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কোথাও কোনও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই?
এ-দিন রাতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন পুলিশের তরফে আদালতে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত কমিশনার সন্তোষ পান্ডে এবং দক্ষিণ সাবার্বান ডিভিশনের ডিসি বিদিশা কলিতা। সন্ধ্যায় রাজ্যের ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে যায়। নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি থানায় নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েক জনের বয়ান নথিভুক্ত করানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষায় নির্যাতিতা তরুণীর