সমস্যা মেনেই পালন ‘ছোট শিল্প দিবস’
নিজস্ব সংবাদদাতা
গত এক দশকে রাজ্যে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পে (এমএসএমই) ঋণদান কয়েক গুণ বেড়েছে বলে জানালেন পশ্চিমবঙ্গের এই শিল্প সংক্রান্ত দফতরের সচিব রাজেশ পাণ্ডে। তবে শুক্রবার, বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বার আয়োজিত আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প দিবস উদ্যাপনের মঞ্চে উঠে এল সমস্যার কথাও। প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা কার্যত স্বীকার করলেন, প্রযুক্তি, রফতানি, তহবিলের সমস্যা এখনও বহু ক্ষেত্রে ছোট শিল্পের কাঁটা। রাজেশের বার্তা, রাজ্যে প্রায় ৯০ লক্ষ ছোট-মাঝারি সংস্থা। অথচ কেন্দ্রের ‘উদ্যম’ পোর্টালে নথিভুক্ত মাত্র ৪৪ লক্ষ। বাকিদের ঋণ পেতে সমস্যা হয়।
রাজেশের অবশ্য দাবি, ‘‘সমস্যা ধরে ধরে সমাধান আনছে এমএসএমই দফতর। প্রযুক্তি সহায়তা দিতে পোর্টাল খোলা হচ্ছে। রফতানিতে সাহায্য করতে রয়েছে একাধিক প্রকল্প। উদ্যমে নাম নথিভুক্তির জন্য নিয়মিত শিবির হয়। খোলা হয়েছে পরিষেবা কেন্দ্র। প্রয়োজনে একাংশের আঁতুড়ঘরও হয়ে উঠছে বাংলা।’’ সচিব জানান, প্রযুক্তি সহায়তা পেতে খড়্গপুর আইআইটি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএসএমই টুলরুম, সিএসআইআর-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাত মেলানো হচ্ছে। অনলাইনে বিশেষজ্ঞদের থেকে সমস্যার সমাধান পাবে সংস্থাগুলি। আইআইএফটি-র সঙ্গে জোট হয়েছে রফতানি সহায়তার জন্য। সামগ্রিক ভাবে পরামর্শ দেবে আইআইএম।
এই অনুষ্ঠানে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার জানান, কী ভাবে বাম শাসিত কেরল এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের থেকে এগিয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘নব্বইয়ের দশক থেকে কেরল ছোট শিল্পে জোর দিচ্ছে। কারণ সেখানে জমি কম লাগে ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কম হয়। বাংলা তখন রূপায়ণের ক্ষমতা না থাকলেও বড় শিল্পে জোর দিত। এর ফল এখন রাজ্য দু’টির দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়।’’ তাঁর কথায়, এ রাজ্যে এমএসএমই-র সমস্যা হল, ‘‘উৎপাদনশীলতা কম, লগ্নি করে তা ফেরত পাওয়ার হার কম, অথচ মজুরি তুলনায় বেশি। ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। সরকার সমস্যা কাটাতে ভর্তুকি দেয়। কিন্তু সেটা স্থায়ী সমাধান নয়।’’ ছোট উদ্যোগে সাফল্যের শর্ত হিসেবে বাংলার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘যেখানে কেরলে ১০০% দ্বাদশ উত্তীর্ণ, সেখানে রাজ্যে তা মাত্র ৫৯%। জাতীয় গড় ৬৮ শতাংশের চেয়ে অনেক কম।’’
বণিকসভা ফিকির অনুষ্ঠানে পাণ্ডের বার্তা, দেড় বছরেই ছোট শিল্পকে
পুঁজি জোগাতে রাজ্যের ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ সাফল্য পেয়েছে। এতে ঋণের অঙ্ক ছাড়িয়েছে ১০০০ কোটি টাকা। আর সার্বিক ভাবে ছোট শিল্পে ঋণের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ২২%। যা চলতি অর্থবর্ষে ২ লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি পেরোবে বলে আশাবাদী রাজ্য।