সম্পর্ক ভাঙার আক্রোশে খুন তরুণীকে, দেহ প্রেমিকেরও
নিজস্ব সংবাদদাতা
তারাপীঠ: খুনের ঘটনায় প্রেমিক অভিযুক্ত জেনে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল তরুণী। পরের মাসে মেয়েটির বিয়ে ছিল। তার আগেই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে অভিযুক্তেরও ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।
ঘটনাটি বীরভূমের তারাপীঠ থানা এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামে নিজের বাড়ির উঠোনেই খুন হয় ওই তরুণী। শুক্রবার সকালে তারাপীঠ থানার মহেশপুর গ্রামের কাছে একটি গাছে বিক্রম লেট (২২) নামে অভিযুক্ত যুবকের ঝুলন্ত দেহ মেলে। তার বাড়িও তারাপীঠ থানা এলাকায়। শুক্রবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’টি দেহের ময়না তদন্ত করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘মেয়েটির সঙ্গে যুবকের ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। পরে তরুণীর পরিবার অন্যত্র বিয়ে ঠিক করলে, ওই যুবক প্রতিহিংসাবশত মেয়েটিকে খুন করে আত্মঘাতী হয়। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।’’
১৮ ছুঁইছুঁই তরুণী চলতি বছর মাধ্যমিক পাশ করেছিল। পরিবার সূত্রের দাবি, মাস খানেক আগে সে জানতে পারে, বিক্রম চার বছর আগে এক আত্মীয়কে খুনের মামলায় অভিযুক্ত। কিছু দিন সংশোধনাগারেও ছিল। এর পরে মেয়েটি বিক্রমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ৬ জুলাই মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়। বিক্রম সে কথা জেনে তরুণীর সঙ্গে তার মেলামেশার ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। তারাপীঠ থানায় মেয়েটির পরিবার মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানায়। পুলিশ বিক্রমের বাবাকে থানায় ডেকে ছেলেকে বোঝাতে বলে। তরুণীর মা জানান, বিক্রমকে চিনতেন। কিন্তু তার সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক ছিল কি না, তা তিনি ভাঙেননি। পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে বিক্রম তাঁদের বাড়ির পাশে গাছের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। রাতের খাওয়া সেরে উঠোনে একা ওই তরুণীকে পেয়ে ছুরি হাতে চড়াও হয়। নিহতের মা বলেন, ‘‘মেয়ের মুখ চেপে ধরে পরের পর ছুরির কোপ মেরে ফেলে রেখে পালায় বিক্রম। হাসপাতালে গিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। আজ সকালে শুনলাম, ছেলেটা আত্মহত্যা করেছে।’’
এ দিন সকালে মেলে বিক্রমের দেহ। পুলিশ জানায়, যুবকের গায়ে রক্তের দাগ ছিল। বিক্রমের বাবা তপন মাল বলেন, ‘‘ছেলে তারাপীঠে দোকানে কাজ করত। সব দিন ফিরত না। দু’দিন আগে বাড়ি ফিরে বলেছিল, ওই মেয়েকে ছাড়া, বাঁচবে না। সকালে পুলিশ ছেলের দেহ উদ্ধারের খবর দেয়। এর বেশি, জানা নেই।’’