জবানবন্দি দিলেন তামান্নার বাবা-মা, গ্রেফতার আরও দুই
নিজস্ব সংবাদদাতা
কালীগঞ্জ ও কৃষ্ণনগর: বোমা মেরে দশ বছরের বালিকা তামান্না শেখকে খুনের মামলায় নদিয়ার কৃষ্ণনগর আদালতে শুক্রবার দুপুরে গোপন জবানবন্দি দিলেন তার বাবা-মা। এ দিনই দুই ধৃতের বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে। বিকেলে মুর্শিদাবাদ থেকে আরও দু’জন ধরা পড়েছে। তবে অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূলের
বুথ সভাপতি গাওয়াল শেখ এখনও পর্যন্ত অধরা।
এ দিনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রামে তামান্নাদের বাড়িতে গিয়ে আইনি সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আজ, শনিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সেখানে যাওয়ার কথা।
গত ২৩ জুন কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূলের আলিফা আহমেদের জয় নিশ্চিত হতেই মোলান্দি গ্রামে কিছু সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে বোমা মারা হয়। বোমায় প্রাণ যায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্নার। তার মা সাবিনা খাতুন ২৪ জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এই মামলায় ধৃত আনোয়ার শেখের বাড়ি থেকে সাতটি সুতলি-বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। তার ভাই, আর এক ধৃত আদর শেখের বাড়িতে মেলে দু’টি সকেট-বোমা। পরে বম্ব স্কোয়াড সেগুলি নিষ্ক্রিয় করে। বিকেলে মুর্শিদাবাদের চৌরিগাছা এলাকা থেকে নবাব শেখ এবং রাহিবুল শেখ ওরফে হাবিবুল নামে দু’জন ধরা পড়ে। নবাব আনোয়ারের আর এক ভাই, আগেই ধৃত মানোয়ার শেখের ছেলে।
শুক্রবার তামান্নার বাবা-মায়ের জবানবন্দির সময়ে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির হন সুকান্ত মজুমদার। গাওয়াল শেখ অধরা কেন প্রশ্ন তুলে সুকান্ত বলেন, “একটা ফুটফুটে মেয়ের জীবন চলে গেল এ ভাবে। এ জন্য তৃণমূল দায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী। পুলিশ ধরবে? শাস্তি দেবে? আমার মনে হয় না!”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সুকান্ত মজুমদার আগে বলুন, কাশ্মীরে নিহত জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের বাড়ি যাননি কেন? ওঁদের এই বাছাই-প্রতিবাদ প্রমাণ করে, ওঁরা দুঃখজনক মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন।” তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের মন্তব্য, “একের পরে এক গ্রেফতারে প্রমাণ হয়, পুলিশ কাজ করছে।”
রুকবানুর, আলিফা বা তৃণমূলের কোনও নেতা অবশ্য এ পর্যন্ত তামান্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাননি। এ দিন বাচ্চাটির বাবা-মা আদালত থেকে ফিরলে, সুকান্ত তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। ইতিমধ্যে ধৃত কালু শেখের নাম করে সাবিনা সুকান্তের কাছে দাবি করেন, “কালু বোমা ছুড়ে মারে। বাকিরা ‘মেরে দে, মেরে দে’ বলে উস্কানি দিচ্ছিল।” পরে সন্তানহারা মা বলেন, ‘‘আমরা আপাতত কোনও সাহায্য নিচ্ছি না।”