দুর্গাপুর-কাণ্ডে ধোঁয়াশা নানা বয়ানে, জোর তথ্য-রিপোর্টে
নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর: বয়ান মিলেছে বিভিন্ন রকম। ফলে, ধোঁয়াশা রয়েছেই। দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সেই ধোঁয়াশা কাটানোরই চেষ্টা চলছে, দাবি তদন্তকারীদের। শুক্রবার কলকাতা থেকে ঘটনাস্থলে আসে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। এ দিন সন্ধ্যায় নির্যাতিতা ছাত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে ওই মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে
জানা গিয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘ধৃতদের পোশাক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহ করেছে। কিছু রিপোর্ট আসা বাকি। অনেক টেকনিক্যাল বিষয় বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।’’
১০ অক্টোবর রাতে সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়ে ওই ছাত্রী নির্যাতিতা হন বলে অভিযোগ। সে রাত থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
এর মধ্যে, মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া গ্রামের পাঁচ যুবক ও তাঁর ওই সহপাঠীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোড়ায় ঘটনাস্থল হিসাবে যতটা জায়গা ঘেরা হয়েছিল, ধৃতদের দফায় দফায় জেরার পরে, সে এলাকা আরও বাড়ানো হয়। এ দিন তদন্তকারীরা ধৃত ও নির্যাতিতার কাছে
পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কতটা জায়গা জুড়ে ঘটনাটি ঘটেছিল, অভিযুক্তদের কে, কোথায় ছিল, কে কোন দিকে পালায়, তা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দেখান। সে অনুযায়ী ফরেন্সিক দল কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। ‘ভিডিয়োগ্রাফি’ করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, নির্যাতিতা ছাত্রী, তাঁর সহপাঠী ছাত্র এবং অন্য ধৃতদের বয়ানের মধ্যে এখনও কিছু ফারাক রয়েছে। ঘটনার রাতে নির্যাতিতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে যে বয়ান দেন এবং ভোরে পুলিশের কাছে যে বয়ান দেন, তার মধ্যেও কিছু ফারাক রয়েছে বলে দাবি। পর দিন নির্যাতিতার বাবা পুলিশের কাছে যে লিখিত অভিযোগ করেন, সেটির বয়ানও কিছুটা আলাদা। আবার, সহপাঠী ছাত্রকে নানা সময়ে জেরা করে অসঙ্গতি মিলেছে বলেও দাবি। তদন্তকারীদের সূত্রের খবর, এ সব কারণে, তদন্তে ধোঁয়াশা কাটাতে প্রযুক্তিগত নানা তথ্য এবং রিপোর্টে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের বয়ানে যে সমস্ত ফাঁক রয়েছে, সেগুলি কী ভাবে পূরণ করতে হবে, সে বিষয়ে বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত ফরেন্সিক রিপোর্ট, ‘মেডিকো-লিগ্যাল’ পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে, অনেক কিছু পরিষ্কার হবে বলে আশা তদন্তকারীদের।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল পরীক্ষা করার পরে এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এ দিন নির্যাতিতাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তিনি আপাতত একটি অতিথিশালায় থাকছেন। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর মা। নির্যাতিতার বাবা বৃহস্পতিবার রাতে ওড়িশায় ফিরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দিন কয়েক পরে দুর্গাপুরে যাব।’’