একসঙ্গে ২১০ মাওবাদীর আত্মসমর্পণ
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর: সেন্ট্রাল কমিটির একজন সদস্য-সহ আজ ছত্তীসগঢ় পুলিশের কাছে আত্মসমপর্ণ করলেন ২১০ মাওবাদী। ওই রাজ্যের জগদলপুরে হওয়া আত্মসমপর্ণের সময়ে নিজেদের ১৫৩টি অস্ত্রও পুলিশের হাতে তুলে দেন মাওবাদীরা।
নিরাপত্তাবাহিনীর চাপে গত কয়েক দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে আত্মসমর্পণের রাস্তা বেছে নিয়েছেন মাওবাদীরা। আজ যে মাওবাদীরা অস্ত্র ছাড়লেন, তার মধ্যে মাওবাদীদের সেন্ট্রাল কমিটির এক জন সদস্য, দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির চার জন, ডিভিশনাল কমিটির ২১ জন সদস্য ও এরিয়া কমিটির ৬১ জন সদস্য রয়েছেন। ছত্তীসগঢ় পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের অধিকাংশ সে রাজ্যের বাসিন্দা। তবে কিছু অন্য রাজ্যের বাসিন্দাও রয়েছেন। কারা কোন এলাকার বাসিন্দা, সেই বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আজকের ওই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণ দেও সাই।
৩১ মার্চের মধ্যে দেশকে মাওবাদী মুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যে কারণে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দু’দিন আগে ছত্তীসগড়ের অবুঝমাড় ও উত্তর বস্তারকে মাওবাদী মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। আজ রাতে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে মোদী বলেন, ‘‘এগারো বছর আগে যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন দেশের প্রায় ১২৫টি জেলা মাওবাদী প্রভাবিত ছিল। আজ সেই জেলার সংখ্যা কমে ১১ হয়েছে। দেশের স্রেফ তিনটি জেলাতেই প্রবল ভাবে মাওবাদী সমস্যা রয়ে গিয়েছে। মাওবাদী সমস্যা বা আতঙ্ক দেশের যুব সমাজের জন্য বড় মাপের অন্যায় ও পাপ। আমি দেশের যুব সমাজকে কোনও ভাবেই ওই হালে ছাড়তে পারি না।’’ মাওবাদী সমস্যার জন্য কংগ্রেসকেই দুষে মোদী বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল যখন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হত, ৩৭০ নিয়ে আলোচনা হত, কিন্তু মাওবাদীদের হিংসাত্মক কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা হত না। কারণ কংগ্রেসি আমলে যে শহুরে নকশালরা বিভিন্ন সংগঠনকে কব্জা করে রেখেছিল, তারা ওই আলোচনা হতে দিত না।’’
যাঁরা এখনও আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের আজ ফের অস্ত্র ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে ছত্তীসগঢ় প্রশাসন। একই আহ্বান জানিয়েছেন মাওবাদীদের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাব-জ়োনাল ইন-চার্জ রূপেশ। অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা রূপেশ বলেন, ‘‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বেঁচে থাকা ও ভবিষ্যতে যে সুযোগ আসবে, তাকে কাজে লাগানো। আমি চাইব, অন্যরাও এগিয়ে আসুক।’’