বাংলাদেশের মানচিত্রে ভারতের উত্তর-পূর্ব, বিতর্ক
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ২৭ অক্টোবর: বারবার উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রবণতা সে দেশের অন্তর্বতিকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। যে দেশ কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাচনে যাবে, তার অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের এ হেন সক্রিয়তা কেন, বড় কোনও শক্তির খেলা রয়েছে কি না তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলেই
সূত্রের খবর।
গত শনিবার রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি সেনার ‘জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটি’র চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জ়ার সঙ্গে বৈঠক করেন ইউনূস। রবিবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সমাজমাধ্যম পাতায় ওই বৈঠকের নির্যাস দেওয়া হয়। সঙ্গে ছিল পাকিস্তানি সেনাকর্তার সঙ্গে ইউনূসের কিছু ছবি। একটিতে দেখা যাচ্ছে, ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি বই ধরে রয়েছেন ইউনূস এবং পাক সেনাকর্তা। গত বছরের জুলাই আন্দোলন সংক্রান্ত ওই বইয়ের প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের একটি পরিবর্তিত মানচিত্র যেখানে উত্তর-পূর্বের ‘সাত বোন’ অর্থাৎ সাতটি রাজ্যকে ওই মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মৌলবাদী জিহাদি ইসলামপন্থী শক্তি যাকে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ বলে দাবি করে, তারই প্রতিফলন ইউনূসের হাতে এবং তিনি তা দিচ্ছেন পাকিস্তানের সামরিক কর্তাকে! যদিও এখনও পর্যন্ত ঢাকা বা নয়াদিল্লির তরফে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
গত মার্চে চিন সফরে গিয়ে ইউনূস বলেন, “সমুদ্রের (বঙ্গোপসাগর) একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।” চিন ও বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন, “ভারতের পূর্ব দিকের সাত রাজ্যকে বলা হয় সাত বোন। এগুলি স্থলভাগ দিয়ে ঘেরা। এদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও পথ নেই।” ভৌগোলিক এই অবস্থানের জন্য বঙ্গোপসাগরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করার যে ‘বড় সুযোগ’ চিন পাবে, তা স্পষ্ট করেছিলেন ইউনূস। মে মাসেও নেপালের পার্লামেন্টের তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার ইন্দিরা রানার সঙ্গে বৈঠকে উত্তর-পূর্ব ভারতকে টেনে মন্তব্য করেন ইউনূস। ওই সময় মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জন্য একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থাকা উচিত। একসঙ্গে কাজ করলেই আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পারব।”